হবস , লক এবং রুশো

Clg political Science questions answers কলেজ রাষ্ট্রবিজ্ঞান অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর হবস , লক এবং রুশো hobos lok abong rusho


প্রশ্ন : হবস কে ছিলেন ও তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম কী ? 

উত্তর : হবস ছিলেন একজন যুক্তিবাদী দার্শনিক ।তাঁর রচিত গ্রন্থ হল – লেভিয়াথান ( ১৬৫১ ) ।


প্রশ্ন : হবসের মতে প্রকৃতির রাজ্যটি কেমন ছিল ? 

উত্তর : হবসের প্রকৃতির রাজ্যটি ছিল প্রাক্-রাজনৈতিক , প্রাক-সামাজিক ও কল্পিত সমাজ । এই প্রকৃতির রাজ্যের মানুষ দৈহিক শক্তিতে সমান ভাবে শক্তিশালী কিন্তু তাদের মধ্যে ছিল চরম অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা , জীবন ছিল হিংস্র , অল্প আয়ু ,ঘৃণ্য ও পাশবিক । 


প্রশ্ন : হবসের মতে সার্বভৌম -এর বৈশিষ্ট্য কী কী ? 

উত্তর : ক ) সার্বভৌম ক্ষমতা হল চরম ,অসীম ও অনিয়ন্ত্রিত ।  

খ ) সার্বভৌমের আদেশ হল আইন । 

গ ) সার্বভৌমের আদেশ লঙ্ঘন এর অর্থ আইনকে লঙ্ঘন করা । 

ঘ ) সার্বভৌম ক্ষমতা হল অবিভাজ্য ।


প্রশ্ন : হবস্ সার্বভৌম ক্ষমতাকে কেন অবিভাজ্য বলেছেন ? 

উত্তর : এই ক্ষমতাকে যদি বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয় তাহলে এর কার্যকারিতা চরম ভাবে বিপন্ন হবে । সার্বভৌম ক্ষমতা কেবল একজন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তি সংসদের হাতে ন্যস্ত করা যায় । 


প্রশ্ন : হবসের মতে সার্বভৌমের অবস্থান চুক্তির উর্দ্ধে কেন ? 

উত্তর : কারণ প্রকৃতির রাজ্যের মানুষের সঙ্গে সার্বভৌম শক্তির কোন চুক্তি হয়নি । চুক্তি হয়েছিল জনগণের সঙ্গে জনগণের তারা অরাজকতাপূর্ণ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য , তাদের আত্মরক্ষার অধিকার ছাড়া অন্যান্য সমস্ত অধিকার সার্বভৌম শক্তির উপর অর্পণ করেছিল তাই সার্বভৌমশক্তি চুক্তির ঊর্ধ্বে ।



প্রশ্ন : হবস কী ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী ছিলেন ? 

উত্তর : হবস্ রাষ্ট্রচিন্তার সূত্রপাত করেছেন ব্যক্তি মানুষের স্বার্থ বা প্রয়ােজনের প্রসঙ্গ নিয়ে । তার মতে ব্যক্তি তার নিজের প্রয়ােজনে রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছে । তাই ব্যক্তিই হল রাষ্ট্রের লক্ষ্য । ব্যক্তি সমষ্টির উপর তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন । এক্ষেত্রে তাকে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী বলা হয় । 


প্রশ্ন : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের চিন্তাধারায় লক কে ছিলেন ? 

উত্তর : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ইতিহাসে লক হলেন একজন প্রাকৃতিক যুক্তিবাদী উদারনীতিবাদী দার্শনিক । 


প্রশ্ন : জন লকের লেখা একটি গ্রন্থের নাম লেখ । গ্রন্থটির প্রকাশ কাল কত ? 

উত্তর : লকের লেখা গ্রন্থটি হল – ‘Two Treatises of Government’ । এই গ্রন্থটির - রচনাকাল হল ১৬৮৯ সাল । 


প্রশ্ন : লকের মতে প্রাকৃতিক অধিকারগুলি কী কী ? 

উত্তর : লকের মতে প্রাকৃতিক অধিকার বা স্বাভাবিক অধিকার ৩ টি । ব্যক্তির জীবন , সম্পত্তি ও স্বাধীনতার অধিকার । 


প্রশ্ন : লকের সামাজিক চুক্তির বৈশিষ্ট্য কী ছিল ? 

উত্তর :  ক ) লকের মতে , প্রকৃতির রাজ্যের  জনগণ প্রথমে নিজেদের মধ্যে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল অর্থাৎ জনগণের সঙ্গে জনগণের চুক্তি হয় । 

খ ) দ্বিতীয় চুক্তি হল , জনগণের সঙ্গে শাসকের চুক্তি । আর এই চুক্তির শর্ত হল জনগণের অধিকার রক্ষায় শাসক ব্যর্থ হলে জনগণের অধিকার থাকবে সেই শাসকের পরিবর্তন করে অন্য শাসক স্থির করা ।

প্রশ্ন : রুশাে কে ছিলেন ? তাঁর রচিত একটি গ্রন্থের নাম লেখাে । 

উত্তর : রুশাে ছিলেন অষ্টাদশ শতকের একজন সামাজিক চুক্তিবাদী দার্শনিক । রুশাের রচিত গ্রন্থের নাম হল – ‘Social Contract’ ।


প্রশ্ন : রুশাের সামাজিক চুক্তির উদ্দেশ্য কী ছিল ? 

উত্তর : স্বাধীনতা ও কর্তৃত্বের মধ্যে সমন্বয় স্থাপন ছিল রুশাের সামাজিক চুক্তির উদ্দেশ্য । চুক্তির ভিত্তি ছাড়া কর্তৃত্বকে মান্য করানাে সম্ভব নয় । আর এই কর্তৃত্বই স্বাধীনতার পথ প্রদর্শক হবে । 


প্রশ্ন : ‘সাধারণ ইচ্ছা’ বলতে রুশাে কী বুঝিয়েছেন ? 

উত্তর : রুশাের সামাজিক চুক্তির প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হল ‘সাধারণ ইচ্ছা'। এই সাধারণ ইচ্ছার মাধ্যমেই রুশাে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের সঙ্গে ব্যক্তি স্বাধীনতার সমন্বয় ঘটিয়েছেন , সামাজিক চুক্তির ফলে যে মিলিত শক্তির উদ্ভব হয়েছিল রুশাের মতে তা -ই হল সাধারণ ইচ্ছা । প্রকৃতির রাজ্যের মানুষ চুক্তি সম্পাদন করে সার্বভৌম সাধারণের হাতে তাদের প্রাকৃতিক অধিকার ও ক্ষমতা স্বেচ্ছায় অর্পন করেছিলেন । সুতরাং সাধারণ ইচ্ছা হল সকল মানুষের শুভ ইচ্ছার সমষ্টি । 

প্রশ্ন : রুশাের ইচ্ছায় কয়প্রকার ধরণের কথা বলা হয়েছে ? 

উত্তর : মানুষের ইচ্ছা হল দুই প্রকার । ( ক ) প্রকৃত ইচ্ছা ( খ ) বাস্তব ইচ্ছা । প্রকৃত ইচ্ছা হল মানুষের সহজ সরল মৌলিক ইচ্ছা । এই ইচ্ছা যুক্তিসঙ্গত এবং সকলের মঙ্গলকামনাকারী ইচ্ছা । কিন্তু বাস্তব ইচ্ছা হল ব্যক্তির ক্ষুদ্র ও সংকীর্ণ স্বার্থের দ্বারা পরিচালিত ।


প্রশ্ন : হবসের মতে রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তি কী ? 

উত্তর : হবসের মতে , রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তি হল ‘সামাজিক চুক্তি’ । 

প্রশ্ন : আইন সম্পর্কে হবসের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল ? হবসের মতে আইনের উৎস কী ? 

উত্তর : আইন সম্পর্কে হবসের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল – আইন হল সার্বভৌমের ইচ্ছা আর আইনের উৎস হল ‘সার্বভৌম শক্তি’ । 

প্রশ্ন : হবসের সামাজিক চুক্তি অনুসারে সকল নর -নারী কার কাছে তাদের অধিকার সমর্পন করেছিল ? 

উত্তর : হবসের সামাজিক চুক্তি অনুসারে প্রকৃতির রাজ্যের মানুষ তাদের আত্মরক্ষার অধিকার ব্যতীত সকল অধিকার সমর্পণ করেছিল সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তি সাংসদের কাছে । 

প্রশ্ন : হবসের , নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রকে একমাত্র কাম্য শাসনব্যবস্থা বলে মনে করেছেন ? 

উত্তর : হবসের মতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতাসম্পন্ন রাজতন্ত্রের অধীন সুষ্ঠ প্রশাসন পরিচালনা হবে এবং রাষ্ট্রীয় শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা হবে । 





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন