রাজনীতি এবং রাজনৈতিক তত্ত্ব

Clg political Science questions answers কলেজ রাষ্ট্রবিজ্ঞান অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর রাজনীতি এবং রাজনৈতিক তত্ত্ব rajniti abong rajnoitik tottho


প্রশ্ন : রাজনৈতিক তত্ত্বের প্রধান কাজ কী ? 

উত্তর : রাজনৈতিক তত্ত্বের প্রধান কাজ হল , তথ্যের সাহায্যে জ্ঞানকে সুসংগঠিত করা , বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতা নির্বাচন করা , গবেষণার কাজে সাহায্য করা এবং পরীক্ষামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা । 

প্রশ্ন : রাষ্ট্রতত্ত্বের কয়টি প্রকার দেখা যায় ও কী কী ? 

উত্তর : রাষ্ট্রতত্ত্বের দুটি প্রকার দেখা যায় । – আদর্শমূলক তত্ত্ব ও অভিজ্ঞতাবাদী তত্ত্ব  ।


প্রশ্ন : আদর্শমূলক তত্ত্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে ।  

উত্তর : দর্শন, ইতিহাস ও আইনের প্রচলিত পথ ও পদ্ধতিসমূহকে অনুসরণ করে নীতিভিত্তিক আলােচনা পাওয়া যায় আদর্শমূলক তত্ত্বে । এই তত্ত্বের দুটি বৈশিষ্ট্য হল - ( ক ) আদর্শমূলক তত্ত্ব মূল্যবােধযুক্ত এবং ভালােমন্দের বিচার করে । ( খ ) এই তত্ত্ব আদর্শ সংগঠন , নৈতিকতা ও মহত্বের সন্ধান করে । 


প্রশ্ন : অভিজ্ঞতাবাদী তত্ত্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে । 

উত্তর : অভিজ্ঞতাবাদী তত্ত্বের দুটি বৈশিষ্ট্য হল – ( ক ) এই তত্ত্ব বাস্তবের ওপর জোর দেয় এবং তথ্যকে সঠিকভাবে উপস্থিত করতে চায় । ( খ ) এই তত্ত্ব দর্শন , ইতিহাস বদলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি , পরিসংখ্যান , সংখ্যাতত্ত্বের সাহায্যে আলােচনা করে থাকে । 

প্রশ্ন : অভিজ্ঞতাবাদী তত্ত্বকে কেন সমালােচনা করা হয় ? 

উত্তর : অভিজ্ঞতাবাদী তাত্ত্বিকেরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন । কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞান মানুষ ও তার সমাজকে নিয়ে আলােচনা করে যা বস্তুজগতের মতাে নিয়মের অধীন নয় । তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিজ্ঞানের পদ্ধতি অনুসরণ করা সম্ভব নয় বলে মনে করা হয় । 


প্রশ্ন : রাষ্ট্রবিজ্ঞানচর্চার দৃষ্টিভঙ্গি বলতে কী বােঝাে ? 

উত্তর : রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চার দৃষ্টিভঙ্গি বলতে রাজনৈতিক বিষয়বস্তুকে ব্যাখ্যা করার বিশেষ ধারাকে বােঝায় ।


প্রশ্ন : সাবেকী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে কিসের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় ? 

উত্তর : সাবেকী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে মূল্যবােধকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্যকরা যায় । 


প্রশ্ন : সাবেকী দৃষ্টিভঙ্গিকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী ? 

উত্তর : সাবেকী দৃষ্টিভঙ্গিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন – ( ক ) দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি ( খ ) ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ( গ ) আইনগত দৃষ্টিভঙ্গি । 



প্রশ্ন : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি কী ? 

উত্তর : দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি হল কাল্পনিক , আদর্শমূলক এবং বর্ণনামূলক । এই দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থকেরা রাজনৈতিক তত্ত্ব এবং রাজনৈতিক দর্শনকে অভিন্ন বলে মনে করতেন ।



প্রশ্ন : দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রবক্তারা কোন পদ্ধতিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় বিশ্বাসী ছিলেন ? 

উত্তর : দার্শনিক পদ্ধতির প্রবক্তারা অবরহী পদ্ধতিতে ( Deductive Method ) এ বিশ্বাসী ছিলেন । 

প্রশ্ন : দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির আলােচ্য বিষয়বস্তু কী ছিল ? 

উত্তর : রাষ্ট্রের প্রকৃতি , রাজনৈতিক আনুগত্য , উত্তম সমাজের প্রকৃতি , কর্তৃত্বের বৈধতা , নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য , ন্যায়বিচার , স্বাধীনতা ইত্যাদি ছিল দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির আলােচ্য বিষয়বস্তু । 


প্রশ্ন : দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির দুটি সমালােচনা লেখাে । 

উত্তর : দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রধান দুটি ত্রুটি হল – ( ক ) এই দৃষ্টিভঙ্গি সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান না করে নৈতিক সমাধানের অনুসন্ধান করে । ( খ ) এই দৃষ্টিভঙ্গি অতি সরলীকরণ দোষে দুষ্ট ।


প্রশ্ন : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় আইনগত দৃষ্টিভঙ্গি বলতে কী বােঝাে ? 

উত্তর : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় আইনগত দৃষ্টিভঙ্গির মূল লক্ষ্য হল সংবিধান ও সাধারণ আলােচনা করা এই আইন দ্বারা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবনের আলোচনা করা । এই দৃষ্টিভঙ্গি রাজনীতির আনুষ্ঠানিক কাঠামাে – সরকার , সংবিধান , প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্র এগুলির আলােচনার উপর জোর দেয় । 


প্রশ্ন : আইনগত দৃষ্টিভঙ্গির দুটি সীমাবদ্ধতা লেখাে । 

উত্তর : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় আইনগত দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতাগুলি হল – ( ক ) এই দৃষ্টিভঙ্গি রাজনীতিকে আইনি কাঠামাের প্রাণহীন দিকের সঙ্গে সংযুক্ত করে । যার ফলে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে না । ( খ ) এই দৃষ্টিভঙ্গি আনুষ্ঠানিক সরকারি কাঠামাে বা আইনের বাইরে কোনাে বিষয়কে গুরুত্ব দেয় না । তাই রাজনীতির সামগ্রিক আলােচনা এই দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা সম্ভব নয় । 


প্রশ্ন : আচরণবাদী বিপ্লবের সঙ্গে জড়িত দুজন প্রখ্যাত রাষ্ট্রচিন্তাবিদের নাম লেখাে । 

উত্তর : চার্লস মেরিয়াম এবং রবার্ট ডাল হলেন প্রখ্যাত দুজন রাষ্ট্রচিন্তাবিদ যারা আচরণবাদী বিপ্লবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন । 


প্রশ্ন : আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির দুটি সমালােচনা লেখাে । 

উত্তর : ( ক )আচরণবাদ হল একটি চরম রক্ষণশীল মতবাদ । ( খ ) আচরণবাদে সংখ্যায়ন ও পরিমাপের অত্যাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয় । 


প্রশ্ন : আচরণবাদী ও মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে পার্থক্য কী ? 


উত্তর : আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গির মূল পার্থক্য হল – ( ক ) আচরণবাদীরা  প্রচলিত সমাজব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখতে আগ্রহী কিন্তু মার্কসবাদীরা সমাজ পরিবর্তনে বিশ্বাসী ।

( খ ) আচরণবাদীদের মূল্যনিরপেক্ষ রাজনীতির আলােচনায় বিশ্বাসী কিন্তু মার্কসবাদীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এইরূপ আলােচনায় বিশ্বাসী নয় ।


প্রশ্ন : কোন্ আচরণবাদী আচরণবাদের অসম্পূর্ণতার সম্পর্কে প্রশ্ন তােলেন ? 

উত্তর : আচরণবাদী ডেভিড ইস্টন আচরণবাদের অসম্পূর্ণতার সম্পর্কে প্রশ্ন তােলেন । 

প্রশ্ন : নয়া আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিবলতে কী বােঝাে ? 

উত্তর : নয়া আচরণবাদী বা আচরণবাদোত্তর দৃষ্টিভঙ্গি হল আচরণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ । এই দৃষ্টিভঙ্গি আচরণবাদের কঠোর পদ্ধতি নির্ভর ও বিজ্ঞাননির্ভর আলােচনা বর্জন করে অতীত ঐতিহ্য ও মূল্যবােধের গুরুত্ব ফিরিয়ে আনে । 

প্রশ্ন : কোন্ দেশে নয়া আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রথম প্রকাশিত হয় ? 

উত্তর : নয়া আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত হয় । 

প্রশ্ন : নয়া আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করাে । 

উত্তর : নয়া আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির দুটি সীমাবদ্ধতা হল – 

( ক ) নয়া আচরণবাদ বা আচরণবাদোত্তর দৃষ্টিভঙ্গি তার আচরণবাদ নামটি পরিত্যাগ করে কিছুটা পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আচরণবাদের বৈজ্ঞানিক ভাবনার প্রতিই আনুগত্য দেখায় । 

( খ ) নয়া আচরণবাদীরা অতীতের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার কথা বলেন । কিন্তু সে কাজ তারা কতটা সফল হতে পেরেছেন এ নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন ।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন