স্বাধীনতা এবং সাম্য

Clg political Science questions answers কলেজ রাষ্ট্রবিজ্ঞান অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর স্বাধীনতা এবং সাম্য swadhin abong sammo


প্রশ্ন : স্বাধীনতা বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : আক্ষরিক অর্থে স্বাধীনতা বলতে নিয়ন্ত্রণবিহীনতা বােঝায় । রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ল্যাস্কির কথায় স্বাধীনতা হল সেই পরিবেশের সংরক্ষণ যেখানে ব্যক্তি তার সত্তার চরম বিকাশ ঘটাতে পারে । 


প্রশ্ন : স্বাধীনতার রক্ষাকবচগুলি কী কী ? 

উত্তর : স্বাধীনতার প্রধান রক্ষাকবচগুলি হল – ( ক ) নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি ( খ ) আইনের অনুশাসন ( গ ) ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ ( ঘ ) দায়িত্বশীল প্রশাসন ( ঙ ) স্বাধীন বিচারালয় ( চ ) মুদ্রাযন্ত্রের স্বাধীনতা ( ছ ) সচেতন জনমত ।  


প্রশ্ন : স্বাধীনতা সম্পর্কে মার্কসীয় ধারণা ব্যাখ্যা কর । 

উত্তর : মার্কসবাদীরা স্বাধীনতার ইতিবাচক ধারণায় বিশ্বাসী । তারা মনে করেন মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশের সুযােগই হল স্বাধীনতা । এই সুযােগ লাভ সম্ভব হবে যদি সমাজে সব রকমের শােষণের অবসান ঘটে । সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলেই এই প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং সাম্যবাদী সমাজে তা পরিপূর্ণতা পাবে । 


প্রশ্ন : স্বাধীনতার ধারণার বিকাশে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ কর । 

উত্তর : স্বাধীনতার ধারণা বিকাশে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা হল – আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম ( ১৭৭৬ ) এবং ফরাসী বিপ্লব ( ১৭৮১ ) । 


প্রশ্ন : স্বাধীনতা সম্পর্কিত আলােচনায় দুইজন রাষ্ট্রচিন্তাবিদের নাম লেখ । 

উত্তর : আর্নেস্ট বার্কার , হ্যারল্ড ল্যাস্কি ।



প্রশ্ন : ইতিবাচক ও নেতিবাচক স্বাধীনতা বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : ইতিবাচক স্বাধীনতা বলতে বােঝায় ব্যক্তির সুস্থ, স্বচ্ছল ও কল্যাণকর জীবনের জন্য অন্তর্নিহিত সত্তার বিকাশ ঘটানাে । আর নেতিবাচক স্বাধীনতা হল ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণের জন্য বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ও ব্যক্তির স্বাধীনতায় বাধাদান করা হল নেতিবাচক স্বাধীনতা । 


প্রশ্ন : জে.এস. মিল কয় প্রকার স্বাধীনতার কথা বলেছেন ? 

উত্তর : জে.এস. মিল দুই প্রকার স্বাধীনতার কথা বলেছেন । ( ক ) আত্মসম্বন্ধীয় স্বাধীনতা ( খ ) অপর সম্বন্ধীয় স্বাধীনতা । 


প্রশ্ন : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ধারণায় কয় প্রকার স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে ও কী কী ? 

উত্তর : ৩ প্রকার স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে । ( ক ) পৌর স্বাধীনতা , ( খ ) রাজনৈতিক স্বাধীনতা ( গ ) অর্থনৈতিক স্বাধীনতা । 

প্রশ্ন : পৌর স্বাধীনতা বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : বার্কারের মতে , মানুষ ব্যক্তি হিসাবে যে স্বাধীনতা ভােগ করে তা হল ব্যক্তি স্বাধীনতা বা পৌর স্বাধীনতা । যেমন - দৈহিক স্বাধীনতা , মত প্রকাশ বিশ্বাস, বৌদ্ধিক স্বাধীনতা, নিজের ইচ্ছা ও পছন্দ অনুসারে চুক্তিমূলক কার্য সম্পাদনের স্বাধীনতা ইত্যাদি হল পৌর স্বাধীনতা ।


প্রশ্ন : রাজনৈতিক স্বাধীনতা বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : রাজনৈতিক বিষয়ে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করা , নিজের পছন্দ অনুযায়ী সরকার গঠনে মতপ্রকাশ , ভােটদান ,নির্বাচিত হওয়া নির্বাচন করা এবং সরকারকে সমালােচনার অধিকারই হল রাজনৈতিক স্বাধীনতার অন্তর্গত। 


প্রশ্ন : অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : অর্থনৈতিক স্বাধীনতা হল এমন একটি স্বাধীনতা যেখানে ব্যক্তিমানুষতার বেঁচে থাকার মূল রসদ খুঁজে পায় , ব্যক্তির জীবনে বেঁচে থাকা ও জীবন ধারণের জন্য অর্থনৈতিক স্বাধীনতা একান্ত প্রয়োজনীয় ।

প্রশ্ন : দুটি পৌর স্বাধীনতার উদাহরণ দাও । 

উত্তর : ( ক ) মত প্রকাশের স্বাধীনতা ( খ )দৈহিক স্বাধীনতা । 

প্রশ্ন : দুটি রাজনৈতিক স্বাধীনতার উল্লেখ কর । 

উত্তর : ( ক ) রাজনৈতিক বিষয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ( খ ) ভােটদানের অধিকার । 

প্রশ্ন : দুটি অর্থনৈতিক স্বাধীনতার উদাহরণ দাও । 

উত্তর : ( ক ) জীবিকা নির্বাহন করার স্বাধীনতা ( খ ) কর্মের স্বাধীনতা ।


প্রশ্ন : পুঁজিবাদী সমাজে স্বাধীনতার প্রকৃতি কেমন ? 

উত্তর : পুঁজিবাদী সমাজে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতার কথা উল্লেখ থাকলেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার প্রসঙ্গ অবহেলিত হয়েছে । পুঁজিবাদী সমাজে অর্থনৈতিক অসাম্য - বৈষম্য এবং শােষণ বলবৎ থাকায় স্বাধীনতা শূন্যগর্ভ তত্ত্বকথায় পরিণত হয়েছে । 

প্রশ্ন : সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় স্বাধীনতাকে কীভাবে দেখা হয়েছে ? 

উত্তর : সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান ঘটিয়ে , শ্রেণী শােষণ ও সকল প্রকার বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে এমন এক আর্থ -সামাজিক ব্যবস্থার সৃষ্টি করে যেখানে স্বাধীনতা প্রকৃত স্বাদ উপলব্ধি করে ।


প্রশ্ন : আইনগত সাম্য বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : আইনগত সাম্য হল আইনের দৃষ্টিতে সকল প্রকার ব্যক্তি সমান এবং সকল ব্যক্তির ক্ষেত্রে আইন সমান ভাবে প্রয়ােগ হবে । আইনের দ্বারা সবাই সুরক্ষিত হবে । 


প্রশ্ন : অর্থনৈতিক সাম্য বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : অর্থনৈতিক সাম্যের অর্থ হল সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সামাজিক সম্পদের সমান ভাবে বন্টন । কিন্তু এই ধরনের সাম্য কখনােই সম্ভব নয় ।কিন্তু রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের মতে , নাগরিকরা যাতে আর্থিক বৈষম্যের শিকার না হয় এই ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সাম্যের কথা বলেছেন । 

প্রশ্ন : সামাজিক সাম্য বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : সমাজের সকল ব্যক্তির মধ্যে ধর্ম, রাজনীতি ,সংস্কৃতি ,শিক্ষা প্রভৃতি বিভিন্ন দিক থেকে সমান সুযােগ - সুবিধা ও অধিকার প্রদানই হল সামাজিক সাম্য । 


প্রশ্ন : রাজনৈতিক সাম্য বলতে কী বােঝ ? 

উত্তর : রাজনৈতিক সাম্য হল – জাতি , ধর্ম, বর্ণ, বংশ - মর্যাদা, অর্থনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি, - স্ত্রী - পুরুষ নির্বিশেষে সকলের সরকার গঠন , সরকারকে সমালােচনা করা , নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা , এইসব ক্ষেত্রে সমান সুযােগ -সুবিধাকে রাজনৈতিক সাম্য বলে । 





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন